ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ভারিবর্ষণে নিচু এলাকা বন্যায় প্লাবিত: পানি বন্দি অর্ধলক্ষ মানুষ

চকরিয়া প্রতিনিধি :
টানা কয়েকদিনের অতিভারি বর্ষণে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরশহরে বন্যা দেখা দিয়েছে। মাতামুহুরী নদীতে তীব্রভাবে পাহাড়ী ঢল নেমেছে। ঢলের পানি মাতামুহুরী ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ২-৩ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সড়কের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ায় কয়েকটি অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে উপজেলার অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, টানা ভরি বর্ষণে চকরিয়া পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। চকরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড, ২নং ওয়ার্ড, ৩নং ওয়ার্ড ও ৮নং ও ৯নং ওয়ার্ডে বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। চুলায় পানি ঢুকে পড়ায় অনেকে রান্না বান্নার কাজ সারতে পারেনি। শতশত মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে।
৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হক জানান, ভারিবর্ষণে তার ওয়ার্ডে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। কোচপাড়া ও মাষ্টারপাড়ার একাধিক বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ন সড়ক গুলোতে যান চলাচল করতে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মোঃ শিবলী নোমান উপজেলার বরইতলী ও কাকারা ইউনিয়ন পরিদর্শন করে জানান; বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ দুইটি ইউনিয়নে বন্যার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে আগামী ২-৩ দিন অত্র এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধস ও নদী ভাঙ্গনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই অতিবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢল ও নদী ভাঙ্গনের সম্ভবনা আছে।
চকরিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন সমূহে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত জনসাধারণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা ও নদী ভাঙ্গন মোকাবেলায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক জানান; ওই ইউনিয়নের মানিকপুর উত্তর পাড়া ও সুরাজপুর দক্ষিণ পাড়ায় প্রায় ১৮শত বাড়ি ঘরে বন্যায় ঢলের পানি ঢুকেছে। এসব পরিবারের লোকজনকে পাশের পাহাড়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও চকরিয়া পৌর সভার কয়েকটি এলাকা, কৈয়ারবিল, বরইতলী ইউনিয়নের শতশত বসতঘরে বন্যার পানি উঠেছে। চকরিয়া-মহেশখালী সড়কের বাটাখালী অংশে বন্যার পানি উঠায় ১১জুন এ সড়কে সরাসরি যানবাহন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। চিরিঙ্গা-মগনামা সড়কের পহরচাঁদা থেকে চড়াপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। জিদ্দাবাজার-মানিপুর সড়কও ঢলের পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান জানান; চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর তীরের কন্যারকুম, কইজ্যারদিয়া, পুরুত্যাখালী এলাকার বেড়িবাঁধের কিছু অংশ চরম ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোড়র্ের শাখা ও সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তারা ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকাও আছে।

পাঠকের মতামত: